পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি।

পাসপোর্ট কত প্রকার এবং পাসপোর্ট কত ধরনের জানতে চাইলে সম্পুর্ণ আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা আজকে জানার চেষ্টা করব পাসপোর্ট মোট কত ধরনের এবং এর প্রকার গুলি সম্পর্কে। দেশের বাহিরে নিজের পরিচয় প্রমাণের জন্য পাসপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। যা ব্যবহার করে বিদেশে আপনি নিজের পরিচয় তুলে ধরতে পারবেন।

যেকোনো দেশে ভ্রমণ বা অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম প্রয়োজন হবে পাসপোর্ট। এই গুরুত্বপূর্ণ নথি ছাড়া আপনি কোন দেশের ভিসা, বা কোন দেশের প্রবেশের অনুমতি পাবেন না বৈধভাবে। অবশ্যই আপনার একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে। তাহলে পরবর্তী যে কোন দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে পারবেন। সকল তথ্য সঠিক থাকলে আপনি সেদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা অনুমোদন পেয়ে যাবেন।

পাসপোর্ট কত ধরনের।

আমরা প্রথমে জানার চেষ্টা করব বাংলাদেশে কত ধরনের পাসপোর্ট রয়েছে। এরপর, আমার জানার চেষ্টা করব প্রকাশ সম্পর্কে। আমাদের দেশে ২০২০ সালের পূর্বে শুধুমাত্র এক ধরনের পাসপোর্ট প্রদান করা হতো। বর্তমানে ২ ধরনের পাসপোর্ট চলমান রয়েছে।

১। এমআরপি পাসপোর্ট।
২। ই-পাসপোর্ট

আপনি চাইলে যে কোন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে, বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় হলো ই-পাসপোর্ট। এটি অত্যন্ত আধুনিক এবং তথ্য সংরক্ষণের সঠিক ব্যবস্থা রয়েছে। যেমনটা আমাদের বর্তমান সময়ের স্মার্ট কার্ড। আর এমআরপি পাসপোর্ট হলো সাধারণ পাসপোর্ট! যেখানে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, জন্ম সাল, আঙ্গুলের ছাপ ইত্যাদি রয়েছে।

দুটি পাসপোর্ট বর্তমানে চলমান রয়েছে। অনলাইন থেকে সরাসরি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই দুই ধরনের পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে খুব বেশি ভিন্নতা নেই, মোটামুটি সব কিছু একই তথ্য প্রদান করতে হয় আবেদনের জন্য।

এমআরপি পাসপোর্ট কি।

এমআরপি পাসপোর্ট হলো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, যা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পাসপোর্টধারীর তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি নির্দিষ্ট মেশিন এর মাধ্যমে সনাক্ত করা যায়। যখন আপনি দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে যাবেন, সেই সময় দেখতে পারবেন একটি নির্দিষ্ট মেশিনের মাধ্যমে আপনার পাসপোর্টটি যাচাই করা হবে।

ই-পাসপোর্ট কি।

ই পাসপোর্ট (E-Passport) হলো প্রযুক্তি সম্পুর্ণ পাসপোর্ট যা পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি একটি ইলেকট্রনিক চিপের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক ডেটা সংরক্ষণ করে। এই চিপের মধ্যে ব্যবহারকারীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি এবং অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্য থাকে, যা ইমিগ্রেশন এবং সিকিউরিটি চেকপয়েন্টে দ্রুত যাচাই করা যায়। ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম দেখুন।

পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি।

এখন আমরা জানার চেষ্টা করবো পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি। উপরে আমরা দেখালম MRP PASSPORT এবং E-PASSPORT এদের বৈশিষ্ট আমরা অন্য কোনো পোস্ট থেকে যেনে নিবো। আমাদের দেশে ৩ প্রকার পাসপোর্ট বর্তমান সময় চলমান রয়েছে। যা বাংলাদেশ সরকার প্রদান করেন।

  • সাধারণ পাসপোর্ট (সবুজ পাসপোর্ট)
  • দাপ্তরিক পাসপোর্ট (নীল পাসপোর্ট)
  • কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট)

তবে, যেকেউ কিন্তু দাপ্তরিক এবং কূটনৈতিক পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবে না। সাধারণত যারা প্রবাসে যায় কাজের উদ্দেশ্যে বা সাধারণ ভ্রমণের জন্য! তাদেরকে শুধু সাধারণ পাসপোর্ট বা সবুজ পাসপোর্ট প্রদান করা হয়ে থাকে।

এবং বাকি দুই পাসপোর্ট সকল ব্যক্তির জন্য না। এই দুটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিগণই পাবেন! যারা সরকারি কর্মচারী রয়েছে এবং উচ্চতর সরকারি কোনো উপদেষ্টা। তারা এই সমস্ত পাসপোর্ট এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে যেতে পারবেন। এবং অন্যান্য পাসপোর্ট এর থেকে এই দুই ধরনের পাসপোর্ট সকল দেশে থেকে কিছু বেশি সুবিধা গ্রহণ করবে।

সাধারণ পাসপোর্ট (সবুজ পাসপোর্ট)

বাংলদেশে জন্ম এমন সকল মানুষ সাধারণ পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং পাসপোর্ট আবেদনের সকল তথ্য সঠিক থাকলে আপনার পাসপোর্ট কিছুদিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। সবুজ কালারের পাসপোর্ট বাংলাদেশের সকলের জন্য।

আপনি যদি কোনো কাজের উদ্দেশ্যে বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে অথবা পড়াশোনার জন্য দেশের বাহিরে যান! এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এই পাসপোর্ট প্রদান করবে। মোট কথা, বাংলাদেশ থেকে যে যে দেশে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে, আপনি সেই সকল দেশে যেতে পারবেন এই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে।

অবশ্যই আপনার বৈধ একটি ভিসা থাকতে হবে। যদি আপনি কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী না হোন! তাহলে এই পাসপোর্ট আবেদন করতে পারেন। এবং বিদেশ ভ্রমণে ক্ষেত্রে খুব সহজে ভ্রমণ করতে পারবেন।

দাপ্তরিক পাসপোর্ট (নীল পাসপোর্ট)

দাপ্তরিক পাসপোর্ট বা নীল পাসপোর্ট হলো একটি বিশেষ ধরণের পাসপোর্ট যা সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য ইস্যু করা হয়। যারা সরকারী কাজে বিদেশে ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য এই পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট সাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়। এর রঙ সাধারণত নীল হয়, তাই এটিকে নীল পাসপোর্টও বলা হয়।

নীল পাসপোর্ট বা অফিসিয়াল পাসপোর্ট মাধ্যমে ভিসা ছাড়াই বিশ্বের প্রায় ২৭টি দেশে ভ্রমণ করতে পারবে। গভর্মেন্ট কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি অফিসিয়াল কোনো কাজের জন্য দেশের বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে তাদের জন্য এই পাসপোর্ট প্রদান করে।

এই পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অবশ্যই (GO) বা Government Order প্রয়োজন হবে। তবে, এই পাসপোর্ট শুধুমাত্র কর্মরত সময়ের জন্ম ব্যক্তিতে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, আপনি যখন রিটায়ার করবেন বা চাকরী থাকবে না, সেই সময় এটি কাজ করবে না।

কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট)

কূটনৈতিক পাসপোর্ট বা লাল পাসপোর্ট সবার জন্য নয়। এমন কি কোনো সরকারি কর্মকর্তা চাইলেও তাকে এই পাসপোর্ট প্রদান করবে না সরকার। কূটনৈতিক পাসপোর্ট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপদে ও সুরক্ষিতভাবে বিদেশ ভ্রমণ করার জন্য ইস্যু করা হয়। কূটনৈতিক পাসপোর্টের কভার লাল হয়, তাই এটি “লাল পাসপোর্ট” নামে পরিচিত।

এই পাসপোর্ট দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ পেয়ে থাকে!যেমন: রাষ্টপ্রধান, রাষ্ট্রদূত, প্রধানমন্ত্রী, সংসদ সদস্য। এছাড়াও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে দেশের বাহিরে ভ্রমণ করতে পারবে।

এই পাসপোর্টের মাধ্যমে যেকোনো দেশে ভ্রমন করা যাবে। এবং কোনো প্রকার অগ্রিম ভিসার প্রয়োজন হবে না। সেই দেশের পৌঁছানোর পর এই পাসপোর্টধারী ব্যক্তিতে সরকারি নিরাপত্তা এবং যাবতীয় তথ্য সহায়তা করবে সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা।

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন পাসপোর্ট কত ধরনের এবং পাসপোর্ট কত প্রকার। যদি আপনার কোনো কিছু বুঝতে সমসসা হয়, অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।

Leave a Comment