ভিসা কত প্রকার সঠিক তথ্য জানুন।

আমরা এই পোস্ট থেকে জানার চেষ্টা করবো! ভিসা কত প্রকার। সাধারণত প্রতিটি দেশের তাদের নিজস্ব নিয়ম বা আইন রয়েছে! যদি আপনি অন্য কোনো দেশে যেতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে একটি পাসপোর্ট ও বৈধ একটি ভিসা। কয়েক ক্যাটাগরির ভিসা সাধারণত বেশির ভাগ দেশে প্রচলিত রয়েছে।

কি কি ভিসা আছে! সারাবিশ্বে প্রতিটি দেশের নিয়ম অনুযায়ী আপনি সেই দেশে যেতে পারবেন। তবে, তাহাদের নিয়ম মেনে আপনাকে যেতে হবে। যাওয়ার জন্য সরকারি অনুমতি বা প্রবেশপত্র ভিসা প্রয়োজন হবে। আপনি সেই দেশের এম্ব্যাসি বা ভালো এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারেন।

ভিসা কত প্রকার। ২০২৪

আমরা এখন ভিসা কত প্রকার সেটি জানার চেষ্টা করবো। পূর্বেই বলেছি প্রতিটি দেশের নিয়ম অনুযায়ী তাদের দেশে বহিরাগত মানুষ প্রবেশ করতে পারবে। তবে, এর জন্য নির্দিষ্ট কারণ ও সময়সীমা থাকবে।

ভিসা মোট কত প্রকার দেখুন!

  • পর্যটন ভিসা।
  • ব্যবসায়িক ভিসা।
  • শিক্ষা ভিসা।
  • কর্মসংস্থান ভিসা।
  • কূটনৈতিক ভিসা
  • চিকিৎসা ভিসা।
  • পারিবারিক ভিসা।

সবচেয়ে বেশি প্রচলিত এই ৭ ধরনের ভিসা। এছাড়াও আরো অন্যন্য ভিসা রয়েছে! তবে, সকল দেশের জন্য একই নিয়ম কানুন এক হবে না। আপনাকে সর্বপ্রথম সেই দেশের নিয়ম জানতে হবে! এরপর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সাধারণত যেকোনো দেশে যাওয়ার আগে বেশিরভাগ মানুষ ট্রেনিং সেন্টার হইতে সেই দেশের বিষয়ে অনেক তথ্য জেনে থাকে।

আপনার যদি কোনো দেশে যাওয়ার প্রয়োজন হয়! তাহলে দেখতে পারেন কোন ভিসায় যেতে হবে। তবে, আমরা দুঃখিত সেই দেশের নিয়ম গুলো এখানে পরিপূর্ণ ভাবে লিখতে পারবো না। কিন্তু, সাধারণ বিষয় গুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার চেষ্টা করবো।

পর্যটন ভিসা (Tourist Visa)

পর্যটন ভিসা হলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো দেশে ভ্রমণে যাওয়া। যদি আপনি কোনো দেশ পর্যটন হিসেবে যেতে চান তাহলে আপনাকে tourist visa আবেদন করতে হবে। এবং, সকল কাজ সম্পুর্ণ হলে আপনি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে, আপনি এই ভিসার মাধ্যমে কোনো অন্য কাজ করতে পারবেন না। যেমন: অর্থ উপার্জন, ব্যবসা, স্থায়ী ভাবে থাকা, ইত্যাদি।

পর্যটন ভিসা বা ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কত দিন? এটি সাধারণত ৩০ দিন হয়ে থাকে। তবে, বিভিন্ন দেশে এটার মেয়াদ ভিন্ন। কোনো কোনো দেশে আপনি ৯০ দিন অর্থাৎ ৩ মাস পর্যন্ত tourist visa দিয়ে থাকতে পারবেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে সেই দেশ ত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আইনি ঝামেলা হতে পারে।

ব্যবসায়িক ভিসা (Business Visa)

ব্যবসায়িক ভিসা শুধুমাত্র বড় বড় ব্যবসায়ীদের জন্য ভালো হবে। কেননা এটির কিছু আলাদা অনুমতি বা পারমিশন দিয়ে থাকে সেই দেশের সরকার। ব্যবসায়িক ভিসা আবেদনের জন্য অবশ্যই আপনাকে কোনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে। এটির মাধ্যমে আপনি যেকোনো দেশে গিয়ে সেখানে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়িক কাজকর্ম, মিটিং, সম্মেলন, বা অন্যান্য ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করার অনুমতি পাবেন।

ব্যবসায়িক ভিসার মধ্যে আবার কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন: মিটিং, ব্যবসায়িক সম্মেলন, প্রকল্প পর্যবেক্ষণ, বিনিয়োগ। এই ধরনের কারণে আপনি এই ভিসার মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন।

ব্যবসায়িক ভিসার মেয়াদ কত দিন? প্রত্যেক দেশের ব্যবসায়িক ভিসার বৈধতা এবং সময়সীমা আলাদা হয়। সাধারণত এটি একটি স্বল্প-মেয়াদি ভিসা, যার মাধ্যমে আপনি কয়েক মাস বা ১ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে এটি একাধিকবার প্রবেশের (multiple-entry) সুযোগ দিয়ে থাকে বিভিন্ন দেশ।

শিক্ষা ভিসা (Student Visa)

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের জন্য সকল দেশের রয়েছে শিক্ষা ভিসা বা Student ভিসা। যদি আপনি দেশের বাহিরে পড়াশোনা, শিক্ষা গ্রহণ করতে চান! তাহলে আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করতে হবে।

Student Visa এটি এমন একটি ভিসা যা একজন শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট কোনো দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পড়াশোনা করার পারমিশন দিয়ে থাকেন। যেসব শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা বা কোনো প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য বিদেশে যেতে চান, তাদের জন্য শিক্ষা ভিসা। এই ভিসার মধ্যে আপনি অনেক সুযোগ সুবিধা পাবেন। যেমন: পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট-টাইম জব করতে পারবেন। আন্তর্জাতিক পরিবেশে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন দেশের সাধারণ নাগরিকের মত।

স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ কত দিন? Student ভিসার মেয়াদ সাধারণত শিক্ষার্থীর কোর্সের সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। কোর্স শেষ হওয়ার পর, শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশ ছেড়ে যেতে হবে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের কোর্স শেষে অস্থায়ীভাবে কাজ করার জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করার সুযোগ থাকে। তবে, সকল দেশে এই নিয়ম প্রয্যেয্য নয়।

কাজের ভিসা (Work visa)

আন্তর্জাতিক কর্মসংস্থান এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নের জন্য কাজের ভিসা (Work Visa) প্রতিটি দেশে চলমান রয়েছে। আমাদের বাংলদেশে অসংখ্য মানুষ প্রবাসে রয়েছেন! আপনি যদি কোনো দেশে কাজ করার জন্য যেতে চান তাহলে আপনাকে ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে সেই দেশে যেতে হবে। এটি করা কিছুটা সহজ, যদি আপনি কোনো কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশে যান।

কাজের ভিসার কিছু ক্যাটাগরি রয়েছে! যেমন: স্থায়ী কাজের ভিসা, অস্থায়ী কাজের ভিসা, স্কিল্ড বা ট্যালেন্ট ভিসা, ইন্টার্নশিপ ভিসা, কোম্পানির ভিসা। আপনি যে কাজের জন্যই বিদেশে যান না কেনো আপনাকে ওই ভিসার মাধ্যমে বিদেশ যেতে হবে। এটির মাধ্যমে আপনি বেশকিছু সযোগ সুবিদা ভোগ করতে পারবেন।

কাজের ভিসার মেয়াদ কত দিন? সাধারণত বেশিরভাগ দেশের কাজের ভিসার সময়সীমা থাকে ৩ থেকে ৬ বছর। অর্থাৎ, আপনি বিদেশে থাকা অবস্থায় ৩ বছরের জন্য ভিসা নবায়ন করতে পারবেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে H-1B ভিসা প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য দিয়ে থাকে। যা পরে আরও তিন বছর পর্যন্ত নবায়ন করা যায়, অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৬ বছর পর্যন্ত মেয়াদ থাকে। এছাড়া, L-1 ভিসার মেয়াদ ১ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। আপনার কাজের উপরে নির্ভর করে মেয়াদ।

কূটনৈতিক ভিসা (Diplomatic Visa)

কূটনৈতিক ভিসা (Diplomatic Visa) হলো বিশেষ ধরনের ভিসা যা কোনো দেশের সরকার বা কূটনৈতিক সংস্থার সদস্যদের দেওয়া হয়। যারা কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করেন। এটি সাধারণত রাষ্ট্রদূত, কনসাল, এবং কূটনৈতিক মিশনের অন্যান্য সদস্যদের কে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, শুধুমাত্র সরকারি কাজের ক্ষেত্রে এই ভিসা প্রদান করে।

যেকেউ চাইলে কূটনৈতিক ভিসা আবেদন করতে পারবে না। এটি শুধু দেশের সরকার কর্তৃক সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হয়ে থাকে। সবচেয়ে এই ভিসার সূযোগ সুবিদা বেশি প্রদান করে হয়, যেমন: শুল্কমুক্ত আমদানি, বিশেষ আইনগত সুরক্ষা, এবং স্থানীয় আইন অনুযায়ী বিভিন্ন কর ও শুল্কের অব্যাহতি।

কূটনৈতিক ভিসার মেয়াদ কত দিন? কূটনৈতিক ভিসার মেয়াদ এবং নিয়ম বিভিন্ন দেশের নীতির ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, কূটনৈতিক ভিসার মেয়াদ নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনকালীন সময়ের জন্য ইস্যু করা হয়। এটি ১ দিন থেকে ১ বচ্ছর পর্যন্ত সময়সীমা হতে পারে।

চিকিৎসা ভিসা (Medical Visa)

দেশের বাহিরে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য রয়েছে medical visa বা চিকিৎসা ভিসা। কোনো ব্যক্তির যদি উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে দেশের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি পুরো বিশ্বের সকল দেশ প্রদান করে থাকে। তবে, এর জন্য সেই ব্যক্তির মেডিকেল ভিসা বা চিকিৎসা ছাড়পত্র লাগবে।

রোগীর সঙ্গে যারা যারা যাবে! তাদের কে Medical Attendant Visa গ্রহণ করতে পারবে। সাধারণত এটা ১/২ জনকে প্রদান করবে। আমাদের দেশে থেকে অনেক মানুষ ইন্ডিয়াতে যান উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের জন্য। এসকল ব্যক্তিদের চিকিৎসা ভিসা প্রয়োজন হয়।

মেডিক্যাল ভিসার মেয়াদ কত দিন? ১৫ দিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে এটার মেয়াদ দিয়ে থাকে। তবে চিকিৎসার সময়সীমা অনুযায়ী মেয়াদ বাড়াতে পারবেন।

পারিবারিক ভিসা (Family Visa)

পারিবারিক ভিসা বিশেষ ধরনের ভিসা! যা পরিবারের সদস্যদের (যেমন স্বামী/স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা, ভাই-বোন) একসাথে থাকার বা মিলিত হওয়ার প্রদান করা হয়। এটি মূলত বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথেও থাকার অনুমতি দেয়।

আপনার কোনো আত্মীয় যদি অন্য কোনো দেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন! সেক্ষেত্রে আপনি তার সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারবেন। এজন্য আপনাকে family visa আবেদন করতে হবে। যদি সকল প্রমাণপত্র সঠিক ভাবে দিতে পারেন তাহলে এটি অনুমোদন পাবেন।

ফ্যামিলি ভিসার মেয়াদ কত দিন? ১৫ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত আপনি আপনার সেই আত্মীয়র সঙ্গে থাকতে পারবেন। তবে, এর নির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হবে। সাধারণত এটি আপনাকে কয়েকমাস পর পর নবায়ন করতে হবে। কেননা এই ভিসায় আপনাকে স্বল্পমেয়াদি সময় প্রদান করা হবে! পরবর্তী নবায়ন করে আপনি এটির মেয়াদ আরোও বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

অন্যান্য ভিসা।

এছাড়াও আরো অনেক ভিসা রয়েছে! উপরে যে সকল ভিসা নিয়ে আলোচনা করা হলো, এই ভিসা প্রায় সকল দেশে চালু রয়েছে এখানেও আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিসা হলো ট্রানজিট ভিসা। যদিও এটা খুব বেশি প্রয়োজন হয় না।

আরোও পড়ুন: ইন্ডিয়ান ভিসা চেক করার নিয়ম

বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অবশ্যই বৈধপথ অবলম্বন করা জরুরি। অসৎ উপায়ে অন্য কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করলে আইনি ঝামেলায় পড়তে হবে। যদি আপনার কাছে বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিত ভাবে বিদেশ ভ্রমণে যেতে পারেন। আপনার যদি আরো কিছু জানার প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

Leave a Comment