নাগরিক সনদ কি! নাগরিক সনদের আবেদন পিডিএফ ডাউনলোড।

নাগরিক সনদ কি ? কেনো এটি প্রয়োজন বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্টে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ কেনো প্রয়োজন, এবং কিভাবে nagorik sanad পাবেন। আপনার স্থানীয় জায়গা ব্যতীত অন্য কোনো জায়গায় যেকোনো কাজের জন্য আপনাকে নাগরিক সনদ দাখিল করতে হবে। বর্তমানে সরকারি বা বেসরকারি, সকল কাজেই নাগরিক সনদ লাগে।

নাগরিক সনদ অনলাইনে আবেদন করা যাবে! এছাড়াও, ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সনদ আবেদনের সিস্টেম রয়েছে। তবে, এর জন্য আপনাকে সাধারণ কিছু কাগজপত্র প্রদান করতে হবে। এটা ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশন মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রদান করে থাকেন।

নাগরিক সনদ কি।

নাগরিক সনদ হলো একটি সরকারি দলিল। যা, বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তির নিজস্ব নাগরিকত্ব ও আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। এটি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রদান করা হয়। শুধু মাত্র বাংলাদেশের জন্মস্থান হলে এই সনদ পাবে। ভ্রমণে আসা বা অন্য দেশে জন্ম এমন কাউকে এই সনদ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদান করবে না।

এটি দ্বারা আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচয় বুঝায়! অর্থাৎ, দেশের মধ্যে বা বাহিরে যদি আপনি কোনো চাকুরির জন্য আবেদন করেন, তাহলে আপনাকে এই নাগরিক সনদ দেখাতে হবে। কেননা এখানে স্থানীয় সরকার বিভাগের স্বাক্ষর থাকে। এবং, বাংলাদেশের বাসিন্দা বলে সেই ব্যক্তি গণ্য হবে।

নাগরিক সনদ পেতে আপনাকে কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। এই তথ্য জমা দেওয়ার পর স্থানীয় সরকার বিভাগ সেগুলো যাচাই করবেন। এবং, তারপর আপনাকে বাংলাদেশ নাগরিক সনদ প্রদান করবেন।

নাগরিক সনদ পেতে কি কি লাগে।

যেহুতু এটি অনেকের প্রয়োজন তাই আরো জানতে হবে! নাগরিক সনদ পেতে কি কি তথ্য লাগে। যদিও, এই সনদ আপনি ১-৩ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। তবে, আপনাকে সঠিক প্রমানপত্র জমা দিতে হবে। এবং, যাচাইয়ের পর আপনাকে nagorik sanad দিবে।

নাগরিক সনদ আবেদন করতে যা যা লাগে!

  • NID কপি অথবা জন্ম নিবন্ধন কপি।
  • আবেদনকারীর পিতা মাতার এনআইডি কপি।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ১কপি ছবি।
  • সচল একটি বাংলাদেশী মোবাইল নাম্বার। l

জায়গা ভেদে আরো তথ্য লাগতে পারে। যেমন: বিদ্যুত বিলের কপি, বাড়ির দলিলের কপি, স্থানীয় প্রতিনিধি বা জনপ্রতিনিধির সুপারিশপত্র। তবে, উপরের দেওয়া মৌলিক তথ্য গুলি দিয়েই নাগরিক সনদ আবেদন করা যাবে। এরপরেও যদি কোনো তথ্যের প্রয়োজন হয়, সেটি স্থানীয় সরকার বিভাগ আপনাকে জানাবে।

নাগরিক সনদ কোথায় পাওয়া যায়।

নাগরিক সনদ আপনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশন মেয়র, পৌরসভা কার্যালয় থেকে নিতে পারবেন। যদি, আপনি নাগরিক সনদ আবেদন করতে চান, তাহলে আপনাকে সরাসরি এখানে যেতে হবে। এবং, প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো প্রদান করলে আপনাকে একটি নাগরিক সনদ বানিয়ে দিবে।

এছাড়াও, চাইলে আপনি নিজে ফরম সংগ্রহ করে সেখানে যাবতীয় তথ্য যুক্ত করতে পারেন। সর্বশেষ, স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য আপনাকে চেয়ারম্যান, মেয়র, বা কমিশনার অফিস কার্যলয়ে আপনাকে গিয়ে অন্যান্য তথ্য সহ জমা দিতে হবে। এরপর, তিনি বা তার সহকারী সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে আপনাকে নাগরিক সনদ প্রদান করবেন।

এছাড়াও, কিছু কিছু জায়গায় আপনি, ওয়ার্ড মেম্বার বা কাউন্সিলর এর থেকে সাহায্য নিতে পারেন। তারা আপনাকে এই সনদ আবেদন ও পেতে সহায়তা করবে।

নাগরিক সনদ আবেদন করার নিয়ম।

নাগরিক সনদ আবেদন করার নিয়ম দুটি রয়েছে, একটি হলো অনলাইনে আবেদন, অন্যটি হলো সরাসরি গিয়ে আবেদন। যদি, আপনার বাড়ি থেকে অনেক বেশি দূর মনে হয়, তাহলে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য আপনার স্থানীয় সরকার বিভাগের অনলাইন পোর্টাল বা সংযোগ থাকতে হবে।

সাধারণ ভাবে নাগরিক সনদ আবেদনের জন্য আপনাকে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন, বা পৌরসভা থেকে একটি নাগরিক সনদ ফরম গ্রহণ করতে হবে। এবং, সেখানে বলে দিবে এর সঙ্গে কোন কোন তথ্য সংযোজন করতে হবে।

বাংলাদেশে কয়েক হাজার ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে, তাই সকল নাগরিক সনদ এর নমুনা এক হবে না। এখানে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাক্ষর। এটি নেওয়ার জন্যে আপনাকে সেখানকার নিয়ম অনুসরণ করে তথ্য জমা দিতে হবে। নাগরিক সনদ আবেদন করার কয়েকদিনের মধ্যে আপনার সনদ তৈরি হয়ে যাবে। এরপর, আপনাকে কল দিয়ে জানানো হবে।

নাগরিক সনদ অনলাইনে আবেদন।

আপনি চাইলে নাগরিক সনদ অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। তবে, এর জন্য সেই ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা অনলাইনে থাকতে হবে। বাংলাদেশের মোটামুটি সকল ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা অনলাইনে রয়েছে। তবে, এখনো কিছু সংখ্যক অনলাইনে নেই। তারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

কিভাবে বুঝবেন অনলাইনে নাগরিক সনদ আবেদন করা যাবে কিনা! এর জন্য আপনার ইউনিয়নের নাম লিখে গুগলে সার্চ করবেন, এবং শেষে gov.bd যুক্ত করবেন। এছাড়াও, আপনি প্রত্যয়ন ওয়েবসাইট থেকে দেখতে পাবেন অনলাইনে আবেদন করা যাবে কিনা।

অনলাইনে নাগরিক সনদ আবেদন করতে https://prottoyon.gov.bd এখানে রেজিষ্টেশন করে, আপনার জেলা, উপজেলা, জন্ম নিবন্ধন / এনআইডি তথ্য দিয়ে প্রোফাইল ১০০% করতে হবে। এরপর, হোম থেকে নাগরিক সনদ এখানে ক্লিক করে আবেদন করতে পারবেন।

অফিসিয়াল ওয়েব পোর্টাল থেকে আপনাকে নাগরিক সনদ আবেদনের জন্য সেখানে নাগরিক অপশনে যেতে হবে। এরপর, যাবতীয় তথ্য প্রদান করতে হবে। আর, প্রত্যয়ন ওয়েবসাইটে রেজিষ্টেশন করে আপনাকে আগে প্রোফাইল ১০০% করতে হবে। এরপর, নাগরিক সনদ আবেদনের পর যদি আবেদন করার অপশন আছে, তাহলে তথ্য দিয়ে আবেদন করা যাবে।

ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সনদ pdf।

ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সনদ দেখতে কেমন হবে নিচের ছবি দেখলে বুঝতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি অনলাইন থেকে নাগরিক সনদ পিডিএফ ডাউনলোড করে সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।

ওয়ারিশ সনদ ফরম নমুনা।
ওয়ারিশ সনদ ফরম নমুনা।

এখানে যে তথ্য দেখা যাচ্ছে, এমন একটি সনদ আপনি অনলাইন থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন তবে, সেখানে আপনাকে ফাইল এডিট করতে হবে। এবং, স্থানীয় সরকার বিভাগের নাম ও অন্যান্য তথ্য যুক্ত করতে হবে। সব থেকে ভালো হয়, যদি আপনি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই নাগরিক সনদ ফরম নিন।

নাগরিক সনদের মেয়াদ কতদিন।

নাগরিক সনদের মেয়াদ সাধারণত নেই! তবে, ৬ মাস থেকে ১ বছর পযর্ন্ত এটার কার্যকারিতা বেশি। অর্থাৎ, এটি যে কাজে ব্যবহার করবেন সেখানে তারা বলবে বর্তমান তারিখ ও সময় অনুযায়ী এই সনদ প্রদান করার জন্য। অনেক সময় চেয়ারম্যান, মেয়র, পরিবর্তন হলে এটি অকাজের বলে অনেকেই গণ্য করেন।

আরোও পড়ুন: ওয়ারিশ সনদ ফরম ইউনিয়ন পরিষদ আবেদন করার নিয়ম।

তবে, এমন দেখা গেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনি নতুন করে নাগরিক সনদ আবেদন করবেন। পূর্বের সনদ সঙ্গে নিয়ে গেলে দ্রুত পেয়ে যাবেন নতুন সনদ।

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন, যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে সেটি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Comment